বিকাশ সিং, কলকাতা : মহিলাদের নিরাপত্তা ও লড়াইয়ের স্বার্থে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতেই তিনি তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন। ধনেখালির সভা থেকে এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। রাজনীতির কারণে তাঁর পরিবার ভেঙে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুজাতা
এদিন সুজাতা ধনেখালির সভার সমবেত জনগণকে প্রশ্ন করেন, ভাইপো হওয়া কি অপরাধ? তিনি বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাঁরা ভাইপো বলে আক্রমণ করছেন, তাঁরা কি অনাথ আশ্রম থেকে এসেছেন? তাঁরা কি কারও ভাইপো ভাইঝি নয়? যদি মায়ের দুধ খেয়ে থাকো, বাপের বেটা হয়ে থাকো, আর যদি হিম্মত থাকে, তাহলে তাঁর নাম ধরে ডাকো। মন্তব্য করেন সুজাতা। তিনি বলেন, এরপর যদি কোনও বিজেপি নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাইপো বলে কটাক্ষ করেন, তাহলে বোঝা যাবে, তাঁরা অনাথ আশ্রম থেকে এসেছেন। তাঁদের কোনও পারিবারিক পরিচয় নেই।
এদিন ধনেখালিতে তৃণমূলের সমাবেশে নেত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ বলেন, তিনি তৃণমূলের দুর্দিনে দলটা করতে এসেছেন। কেননা তার মতে বিজেপি নেতারা বলেন, এখন তাদের নাকি সুদিন। তৃণমূলে পাঁচিলে বসে থাকা নেতা, ধান্দাবাজ, পাল্টিবাজ নেতা থাকা সত্ত্বেও এই এই দলটা করতে এসেছেন। তিনি বলেন, বিজেপির জন্য অনেক রক্ত ও ঘাম ঝড়িয়েছেন। ৩০৩ জন সাংসদের মধ্যে একজন সাংসদ উপহার দিয়েছেন।
তাই এই পরিস্থিতিতে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে কেন তিনি তৃণমূলে যোগ দিলেন, বলেন সুজাতা। তিনি বলেন, যেদিন বিজেপি করতে শুরু করেছিলেন, সেদিন বিজেপির এই রাজ্যে দুজন সাংসদ ছাড়া আর কিছু ছিল না। তিনি বলেন, বিজেপিতে কোনও নেতা নেই, তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা নেতা ভাড়া করছে বিজেপি। সেই কারণে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
এদিনের সভা থেকে বিজেপি সাংসদ এসএস আলুওয়ালিয়া এবং বাবুল সুপ্রিয়কে আক্রমণ করেন সুজাতা। নাম না করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে দার্জিলিং আর ২০১৯-এ দুর্গাপুরের মানুষ একজন সাংসদকে জিতিয়ে বুঝতে পারছেন, তাঁরা কী ভুল করেছেন।
সুজাতা মণ্ডল খাঁ এদিন শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে তাঁকে ধান্দাবাজ বলে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, দুদিন আগে তিনি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে বলছেন, দলে বঞ্চিত ছিলাম। কিন্তু দশ বছরের বেশি সময় তিনি সাংসদ, বিধায়ক, একাধিক দফতরের মন্ত্রী, একাধিক সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বলেন, পাঁচিলের ওপর বসে থেকে তিনি যখন বুঝতে পারলেন তৃণমূলে থাকলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যাবে না, তখন তিনি পাঁচিল থেকে ঝাঁপ মেরে দিলেন।
একইসঙ্গে অধিকারী পরিবারকেও তিনি আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জনগণের দয়ার দানে বিধায়ক এবং সাংসদ পদ ভোগ করছেন তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য। তিনি বলেন, বিজেপিতে তো ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী আর ১৩ জন উপমুখ্যমন্ত্রীর লাইনে, তা তিনি (শুভেন্দু) কত নম্বরে আছেন, প্রশ্ন করেছেন সুজাতা।