কেয়া সরকার, কলকাতা : বিজেপির পাঁচ মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বিধায়ক দলের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার পর আরও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে চলেছে। বিজেপির রাজ্য কমিটি ও সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে মতুয়াদের গুরুত্ব না দেওয়ার পরই বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন তাঁরা। এরপর অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের তরফ থেকেও এল তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। যা বিজেপির প্রতি অনাস্থা সূচক বলে মনে করা হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দু গায়েন সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। তাঁর সেই ফেসবুক পোস্ট নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন- অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ আর নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক পার্টিকে সমর্থন করবে না। আরেকটি পোস্টে লেখা হয়- মতুয়াদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তৈরি থাকুন আগামী দিনের জন্য। মতুয়ারাও বঞ্চিত করার ক্ষমতা রাখে।
মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে এই জোড়া ফেসবুক পোস্টের পর জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কি বিজেপির সঙ্গ ছাড়তে চলেছে মতুয়ারা। তাই কি সংগঠনের তরফ থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হল। এই মুহূর্তে মতুয়া মহাসঙ্ঘ পরিচালনার দায়িত্ব ঠাকুরবাড়ির দুই সদস্য মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুরের উপর ন্যস্ত। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। মতুয়া সম্প্রদায় দুজনের নেতৃত্বই মেনে চলে।
পদাধিকার বলে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দ্রনাথ গায়েন। সেই সুখেন্দ্রনাথই ফেসবুক পোস্ট করে জল্পনা বাড়ালেন। তা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তিনি মতুয়াদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ আর নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না।
এই ফোসবুক পোস্টের পর অবশ্য সুখেন্দ্রনাথ গায়েন জানান, এটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমরা মোট ১১ দফা দাবি নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার একটাও পূরণ হয়নি। সবক্ষেত্রেই মতুয়া বঞ্চিত হয়ে রয়েছে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে তাদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি।
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা মতুয়া অধ্যুষিত। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এবং ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির দুই ছেলে ও মতুয়া ঘনিষ্ঠদের প্রার্থী করেছিল বিজেপি। তাঁরাই জয়যুক্ত হন। কিন্তু মতুয়ারা বঞ্চিতের দলেই রয়ে যান। এরপর বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলেও মতুয়ারা বঞ্চিত থাকেন। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার চার মতুয়া বিধায়ক এবং রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন। তারপর মতুয়া মহাসঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক গর্জে ওঠেন ফেসবুক পোস্টে।